How to plan a refresher course?

1. Upload the concept note before asking people to apply for the course.

2. Prepare a schedule of the entire 12-day course and circulate it among the participants before day 1 of the course.

3. Have resource persons who teach the subject professionally rather than having resource persons from other subjects. There is a reason why separate subjects exist.

4. Have resource persons circulate some material before their lectures so that participants can follow the lectures better.

5. Ask resource persons to speak about mainstream material. Speaking about recondite aspects is not refreshing knowledge. It is learning new things. For a 1-hour module, it is unfair to expect participants to find out about something completely different from what their profession demands.

Approved protest vs. unapproved protest

Rory Smith and Tariq Panja, ‘The Erasure of Mesut Özil,’ The New York Times, 26 October 2020

পশু কাহিনী-০২: শেং ডু-র আঁকা জিরাফ

    বর্তমান মালদা জেলার পাণ্ডুয়ার গৌরবময় ইতিহাস বুঝতেে হলে ওখানকার ধ্বংসস্তূপ দেখতে হয়। চতুর্দশ শতাব্দীর মাঝামাঝি থেকে পঞ্চদশ শতাব্দীর মাঝখান পর্যন্ত শাহী বাংলার রাজধানী ছিল পাণ্ডুয়া। পরে রাজধানী গৌড়ে স্তানান্তারিত হয়, এবং পাণ্ডুয়া পরিত্যক্ত হওয়ায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। চীন দেশে তখন কুবলা খাঁ-র ইউয়ান রাজবংশের সাম্রাজ্য শেষ হয়ে হান রাজাদের মিং বংশের সাম্রাজ্য শুরু হয় নানজিং শহরকে কেন্দ্র করে। আফ্রিকার কেনিয়া দেশের প্রাচীনতম শহর, মোম্বাসা-র, থেকে ১০০ কি.মি. দূরে সমুদ্রতটেরই আরেক শহর মালিন্দি। মালিন্দি, পাণ্ডুয়া ও নানজিং—এই তিন শহরকে ১৪১৪ সালে জুড়ে ফেলেছিল একটি জিরাফ।
    শাহী বাংলা তখনকার বস্ত্রশিল্পের একটা গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি ছিল। ভারতের অন্যান্য এলাকার সঙ্গে ব্যবসা ছাড়াও, পশ্চিম দিকে আরব দেশ ও আফ্রিকার সঙ্গে, ও পূর্ব দিকে এশিয়ার অন্যান্য কিছু দেশ যেমন চীনের সঙ্গেও শাহী বাংলা ব্যবসা করতো। ব্যবসা রমরমা হলেও রাজনৈতিক স্তিতিশীলতা ছিলনা। ঘনঘন ইলিয়াস শাহী বংশের রাজা পরিবর্তন হচ্ছিল। এরকমই এক সময় এসে পৌঁছায় মালিন্দি থেকে আসা এক দল রাজদূত ও ব্যবসায়ীরা ইলিয়াস শাহী রাজার জন্য তোফা নিয়ে। একটি তোফা একখানা জিরাফ।
    জিরাফ মানুষের পক্ষে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় নিয়ে যাওয়া একবিংশ শতাব্দীতেও কঠিন এবং মাঝে মাঝে পশুশালার আদান-প্রদানের মধ্যে জিরাফ হস্তান্তর করতে গিয়ে তারা মারা যায়। পঞ্চদশ শতাব্দীতে যাত্রাটা আরো নিশ্চই কঠিন ছিল। আফ্রিকার বাইরে জিরাফ আগেও পাঠানো হয়েছিল। প্রাচীন রোমে খ্রিস্টপূর্বে জিরাফ মাঝে মধ্যেই আফ্রিকা থেকে পাঠানো হতো। রোমান সাম্রাজ্যের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ততেও জিরাফ পাঠানো হতো। পশ্চিম এশিয়ার একাধিক এলাকায় প্রাচীন রোমান সাম্রাজ্যের সময়কার মোসেইকে পাওয়া যায় জিরাফের চিত্র। তবে পশ্চিম রোমান সাম্রাজ্যের অবনতির পর, পশ্চিম ইউরোপে ত্রোয়দশ শতাব্দীর আগে আর জিরাফ দেখা যায়নি। প্রাচীন গ্রীস ও রোমের গ্রন্থে জিরাফের উল্লেখ পাওয়া যায়। সেই সব গ্রন্থে এই পশুর নাম ছিল ক্যামেল-লোপার্ড, উঁট-চিতা বাঘ, কারণ পশুটি প্রথমটার মত লম্বা ও দ্বিতীয়টার মত তার গায়ে ছোপ।
    ভারতবর্ষে জিরাফ প্রথম কবে আফ্রিকা থেকে আনা হয়, তার হদিশ পাওয়া মুশকিল। ত্রোয়দশ শতাব্দীতে নির্মিত কোনার্ক সূর্য মন্দিরের গায়ে জিরাফের খোদাইচিত্র দেখা যায়। তবে চীনে প্রথম জিরাফ নিয়ে যাওয়া হয়ে সেই ১৪১৪ সালেই। চীনের অভ্যন্তরিন সমস্যায় জর্জরিত মিং রাজারা চীনের বাইরের জগতের সঙ্গে ব্যবসায় খুব বেশি ইচ্ছুক ছিলনা। তবে পঞ্চদশ শতাব্দীর প্রথমে চীনের রাজা হয় শু দি যে ইয়ংলে নাম অবলম্বন করে। ইয়ংলে চীনের ইতিহাসে নানান পরিবর্তন ঘটায়। নানজিং থেকে বেইজিং-এ নিজের রাজধানী সরিয়ে আনে। সমুদ্র পথে ব্যবসা করার মহান পরিকল্পনা করে। চীনে বহুকাল ধরেই রীতি ছিলো শত্রুদের যৌনাঙ্গ কেটে দেওয়ার। এই অত্যাচার করা বালকদেরই আবার পরে মন্ত্রিসভায় জায়গা হতো। ভাবা হতো, এদের যেহেতু প্রজননক্ষমতা হারিয়ে গিয়েছে, ফলে এরা রাজাকে টপকে নিজের রাজত্ব স্তাপন করার চেষ্টা করবে না কারণ তাদের কোনো উত্তরাধিকার থাকবে না। এরকম একজন বালক ছিল মা হে যাকে পরে রাজা নাম দিয়েছিল জেং হে। জেং হে রাজার সবচেয়ে বিশিষ্ট কর্মচারীরাদের মধ্যে জায়গা তৈরি করে নেয়ে। ১৪০৫ থেকে শুরু করে ১৪৩৩ পর্যন্ত জেং হে জাহাজে করে সাতখানা অভিযান চালায় পৃথিবীর নানা দেশে। সেই অভিযানের মাত্রা চীনের শক্তি ও মাপের সঙ্গে মানানসয়ী ছিল। সেই শতাব্দীর শেষে যখন ক্রিস্টোফার কোলাম্বাস যাত্রা শুরু করে, তার দলে ছিলো নব্বইয়ের কাছাকাছি মানুষ। জেং হে-র ছিল পয়ত্রিশ হাজার। জেং হে-র সব চেয়ে বড় জাহাজ কোলাম্বাসের সব চেয়ে বড় জাহাজের চেয়ে প্রায় কুড়ি গুন বড় ছিল। এরকমই এক চৈনিক অভিযান ১৪১৪-তে এসে পৌঁছায় বাংলার পাণ্ডুয়া তে। জেং হে-র মূল অভিযানের থেকে কিছু নাবিক আলাদা ভাবে পাণ্ডুয়া এসে পৌঁছোয়। সেখানে তখন মালিন্দি থেকে আসা জিরাফ-ও রয়েছে। সেই জিরাফ দেখে চীন থেকে আসা মানুষেরা হতভম্ব হয়ে যায়। চীন ও আফ্রিকার মধ্যে ক্রিস্টপূর্ব যুগ থেকেই ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছিলো ভারতের কেরলের থেকে ত্রোয়দশ শতাব্দীতে আফ্রিকার জিব্রা ও টোপি চীনের জাহাজে করে চীনদেশে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তবে চীনের মানুষেরা আগে জিরাফ দেখেনি। তাদের প্রাচীন লোককথায় কিইলিন নামক এক পশুর কথা আছে (যা অনেকেই পাশ্চাত্যের ইউনিকর্ণের সঙ্গে জোড়ে)। এদের মনে হলো এই তো সেই কিইলিন! শিগ্‌গির নানজিং-এ মহারাজের কাছে নিয়ে যেতে হবে। তবে মালিন্দির মানুষেরা তো এই জিরাফ ইলিয়াস শাহী বাংলার সুলতানকে দিয়েছিল। ফলে, বাংলার সুলতানকে বলা হলো যে এই পশু তাদের চীনের ধর্মে পবিত্র, যেমন পবিত্র ড্র্যাগান, ফিনিক্স ও কচ্ছপ। সুলতান চীন থেকে আসা যাত্রীদের তাদের রাজার জন্য এই তোফা পাঠিয়ে দিলো। কিন্তু, চৈনিকরা ভাবলো আরেকটা জিরাফ হলেও মন্দ হয় না। ফলে, মালিন্দি থেকে আসা মানুষদের কাছে অনুরোধ জানানো হলো আরেকটা জিরাফের। জেং হে চীনে সেই বার ফেরৎ যাওয়ার পর, তার পরের যাত্রায় আফ্রিকা পর্যন্ত যায় এবং মালিন্দিতে যেতে ভোলেনি। ১৪১৪-এর এবং ১৪২১-এর চৈনিক যাত্রা থেকে চীনের নাবিকেরা নিজেদের রাজাকে দুই দুটো জিরাফ উপহার দিতে পেরেছিলো। প্রথম জিরাফটি পাওয়ার পরই রাজা ইয়ংলে এই অদ্ভূত জীবের একটি চিত্র বানিয়ে রেখেছিলো নিজের চারুলিপিকর শেন ডু-কে দিয়ে। সেই চিত্র আজ আমেরিকার ফিলাডেলফিয়া শহরের এক যাদুঘরে। তবে, সেই চিত্র থেকে আফ্রিকা, বাংলা ও চীন-এর মধ্যে এক জিরাফ-যোগসূত্র খুঁজে পাওয়া যায়।
    চিত্রটিতে দেখা যায় একটি জিরাফ ও তার দেখাশোনা করার এক লোককে। জিরাফের গায়ের দাগ ছোপ ছোপ না হয়ে, ত্রিকোণা ঢেউয়ের মত হয়ে গেছে। চীনের প্রবাদে যখনই কোন দয়ালু, শক্তিশালী ও ভালো রাজা থাকবেয়, স্রেফ তখনই কিইলিনের দেখা পাওয়া যাবে। চিত্রটি রাজশক্তির প্রমাণ—তাদের রাজার কাছে দুরূহ প্রাণীও আশ্রয় নেয়। সেই দুরূহ প্রাণীটিকে সাধারণ মানুষকেও চিনতে হবে। রাজা আগেই ঘোষণা করে দিয়েছিলো যে এই প্রাণীই কিইলিন, নিজের ক্ষমতা প্রদর্শন করার জন্য। কিইলিনকে ইউনিকর্ণের সঙ্গে একই ভাবে ভাবা হয়। ইউনিকর্ণ মানেই তার একটা শিং। তবে, জিরাফের দুটো শিং এবং শেন ডু-র চিত্রের জিরাফের-ও দুটো শিং। ফলে, জিরাফ-ই কিইলিন কি না চীনের মানুষের মধ্যে এই সংশয় থেকে থাকতেই পারে।
    গণ্ডার ও জিরাফ—এই দুই পশুকেই কোন এক কালে ইউনিকর্ণ ভাবা হতো। এখন অনেকে বলে যে নারওয়াল নামক সামুদ্রিক জীবের শিং-কেই আগে অনেকে ইউনিকর্ণের শিং বলে চালাতো। গণ্ডার ভারতেও পাওয়া যায়, তাই আমরা এই পশুটিকে ইংরিজি নাম, রাইনোসেরাস, ছাড়াও অন্য নামে জানি। জিরাফ ভারতে ইংরেজদের আসার আগে থেকেই আরব ও আফ্রিকার মানুষেরদের থেকে আমরা চিনেছি। তবে জিরাফ ভারতে বহু কোটি বছর ধরেই পাওয়া যায় না। ফলে, জিরাফ চিরকালই ভারতে বিদেশী পশু। ইংরেজদের আসার পরই জিরাফ নিয়ে বেশি আলোচনা হয়েছে ভারতে আগের থেকে। ফলে, ইংরেজদের ব্যবহার করা নাম ধরেই আমরা এই আফ্রিকার পশুকে চিনি। তবে, শাহী বাংলার আন্তর্জাতিক ব্যবসার এক দারুণ উদাহরণ মালিন্দি থেকে আসা সেই জিরাফ যা চীনের নানজিং শহরে গিয়ে শেং ডু-র চিত্রে আবদ্ধ হয়ে পড়ে।

পশু কাহিনী-০১: ড্যুরারের আঁকা গণ্ডার

    ভারতীয় গরম মশলা—পঞ্চদশ শতাব্দীর পশ্চিম ইউরোপে এর দাম আজকের দামের চেয়ে ৪০ গুণ ছিল। ইতালীয়রা এই ভারতীয় গরম মশলার পাইকারি ব্যবসা করতো। ১৪৫৩-এ কনস্ট্যান্টিনোপেল, বা বর্তমান ইস্তানবুল, ক্রিস্টান রাজাদের হারিয়ে মুসলমান রাজারা অধিগ্রহণ করে নেয়। ইউরোপ ও এশিয়ার সীমান্তের এই শহর ছিল এই দুই মহাদেশের মধ্যেকার গুরুত্বপূর্ণ যোগসূত্র। ক্রিস্টান ও মুসলমান রাজাদের বিবাদের জন্য এই দুই মহাদেশের মধ্যেকার ব্যবসা ধাক্কা খায়। ক্রিস্টান রাজারা এশিয়াি মহাদেশে পৌছোনোর নতুন পথ খুঁজতে থাকে। স্থল ছেড়ে জলে নামে ক্রিস্টান ব্যবসায়ীরা। ১৪৯৮-এ কেরলের কোরিক্কোড় শহরের কাছে এসে পৌঁছায় ভাস্কো দা গামার জাহাজ। সেই থেকে শুরু হয় জল-পথে ইউরোপ ও ভারতের মধ্যে আদান-প্রদান। কোরিক্কোড়-এ আস্তানা গড়তে না পেরে, কোরিক্কোড়-এর প্রতিপক্ষ কোচি-তে পর্তুগীজরা নিজেদের সাম্রাজ্য স্তাপন করে। দিউ দ্বীপের জন্য যুদ্ধে গুজরাটের মুসলমান রাজাদের হারানোর পর গোয়ায় পর্তুগীজরা নিজেদের রাজধানী গড়ে। ১৫১৪-তে পর্তুগীজরা খাম্বাটের সুলতান দ্বিতীয় মুজাফ্‌ফার শাহ-এর থেকে অনুমতি চায় দিউ দ্বীপে একটা কেল্লা স্তাপন করার জন্য। অনুমতি তারা পায় না। কিন্তু উপহারের মধ্যে পায় একটা হাতির দাঁতের কেদারা ও একটা ভারতীয় গণ্ডার ও সেই গণ্ডারের দেখাশোনার জন্য ওসেম নামক এক প্রশিক্ষকের।
    পর্তুগীজ গভর্নার আফোন্সো দে আলবুকুয়েরকে ভাবে যে পর্তুগালের রাজা প্রথম ম্যানুয়েল-এর কাছে সে এই অদ্ভুত জীব যার ব্যপারে বহু কাল ধরে ইউরোপের মানুষেরা প্রাচীন রোমান পুঁথিতে পরে এসেছে কিন্তু দেখে নি, সেটি পাঠাবে এক দারুণ উপহার হিসেবে। জানুয়ারী ১৫১৫-তে ‘নসসা সেনিয়োরা দা আজুদা’ নামক একটা গরম মশলা বাহক জাহাজে করে গোয়া থেকে পর্তুগালে এই গণ্ডার, ওসেম নামক দেখাশোনার লোক ও গণ্ডারটির খাওয়ার জন্য বহু পরিমাণে চাল ও অল্প খড় পাঠানো হয়। তাজা ঘাস ও ফল খাওয়া পশুর জন্য চাল সেদ্ধ করে ভাত ও খড়-ই হয়তো লম্বা জাহাজ যাত্রার জন্য উপযুক্ত মনে করা হয়েছিল। প্রায় চার মাস লাগিয়ে দেয় এই জাহাজ এই যাত্রা করতে। জাহাজটা টানা যাত্রা না করে মাঝে এই জলপথের তিনটি পর্তুগীজ ঘাঁটিতে থামে—মোজাম্বিক, সেন্ট হেলেনা ও আজোরেস। সেন্ট হেলেনা দ্বীপটি সেই যাত্রার তিনশো বছর পর বেশি বিখ্যাত আরেক অথিতিকে পায়—নেপোলিয়ান বোনাপার্ট।
    পর্তুগালের রাজধানী লিসবানে ২০শে মে নেমে গণ্ডারটিকে প্রথমে রাখা হয় নির্মীয়মাণ বেলেম দালানের কাছে এবং পরে রিবেইরা রাজপ্রাসাদের পশুশালাতে। প্রাচীন গ্রীক ও রোমান পর্যটক ও ইতিহাসবীদরা পাণ্ডুলিপিতে লিখে গেছিল ভারতীয় এই অদ্ভুত পশুর ব্যপারে। এক সহস্রাব্দেরও বেশি পশ্চিম ইউরোপীয় কোন ব্যক্তি এই পশু দেখেছিলো না। গণ্ডার বা রাইনোসেরস এবং ইউনিকর্ণ—এই দুই পশুই ছিল বইয়ের গল্প। কোনটা সত্যি আর কোনটা নয়, কেউই ঠিক মত জানতো না। গণ্ডারটিকে দেখে জানতে পারলো যে অন্তত এই জীবটির অস্তিত্ব সত্যিই আছে। প্রাচীন লেখকেরা তাহলে ঠিকই বলেছিলো। এবার স্রেফ ইউনিকর্ণ-এর অপেক্ষা!
    প্রাচীন রোম থেকেই বিভিন্ন পশুদের একত্রিত করে তাদের একে অপরের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিয়ে যুদ্ধ দেখার শখ মানুষেরা পোষন করে এসেছে। পশুর বিরুদ্ধে মানুষের লড়াই বা দুই মানুষের লড়াই—এই সব শখের জন্য আলাদা নির্মাণ ও করা হত, যেরকম রোম এর কলোসিয়াম। ইতিহাস থেকে জানা যায় যে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই পশুরা এই সব প্রতিযোগিতা বুঝতে না পেরে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতো। খাওয়া বা নিজের জাতীর স্ত্রীলিঙ্গের পশুর সাথে যৌনমিলনের অধিকার পাওয়ার বাইরে পশু জাতির ভিতর মারপিট করার প্রবণতা কম। ফলে, মানুষেরা অনিচ্ছুক পশুদের খুঁচিয়ে বিরক্ত করে বা তাদের ভয়ানক ঘায়েল করে আরেক পশুর বা মানুষের সাথে ছেড়ে দিতো যাতে পশুরা ভাবতো অন্য পশুরা বা মানুষের ক্রীতদাসরাই তাদের শত্রু, অন্যান্য মানুষেরা নয়। প্রাণের ভয় নিজেকে বাঁচাতে এক পশু অন্য আরেক পশুর সঙ্গে যুদ্ধ করতে লাগতো। লাগুক যুদ্ধ, দে তালি।
    গণ্ডারটি লিসবানে আসার মাসখানেকের মধ্যেই ৩রা জুন, পারদের এক রবিবার, পর্তুগীজ রাজা একটা যুদ্ধের আয়োজন করলো। দুই বিরাট আকারের জীবের মধ্যে। এক দিকে এই গণ্ডার, আরেক দিকে নিজের পশুশালার একটা হাতি। প্রাচীন রোমান লেখক জ্যেষ্ট প্লিনি-র প্রাকৃতিক ইতিহাস নামক গ্রন্থে লেখা ছিলো যে গণ্ডার ও হাতি একে অপরের শত্রু। বইয়ের কথা মিলিয়ে নেওয়ার ও পশু লড়াইয়ের নৃশংস আনন্দ পাওয়ার এই সুযোগ রাজা হাতছাড়া করতে চায়নি। দুই বিরাট আকারের জীব। নিজেদের প্রাকৃতিক পরিবেশের বাইরে সময়ের সাথে কিছুটা মানিয়ে নিতে পারলেও এই কৃত্রিম বন্দোবস্ত বুঝতে পারছিলো না। মানুষের হৈহৈ, অন্যদিকে হয়তো অচেনা বা বহু আগে দেখা আরেক জীব। কী করবে বুঝতে না পেরে, হাতিটি একটি অবরুদ্ধ দ্বারের বেড়া ভেঙ্গে ভিতরের ধুকে গিয়েছিলো রাজার যুদ্ধ দেখার বন্দোবস্ত ভেস্তে দিয়ে।
    যুদ্ধ থেকে রেহাই পেলেও গণ্ডারটি শেষ যাত্রায় রেহাই পায়নি। তার কারণ মানুষের কৌতূহল ও গণ্ডারটির খ্যাতি। নানান ইউরোপীয় দেশ থেকে মানুষেরা গণ্ডারটিকে দেখতে আসে। একজন ইতালীয় ডাক্তার, জিয়োভানি জিয়াকোমো পেন্নি এই গণ্ডারটিকে নিয়ে একটা ছোট্ট পুস্তক প্রকাশ করে যাতে একটা চিত্র-ও আঁকে এই গণ্ডারটির। ভালেন্তিম ফের্নান্ডেস নামক জার্মান ভাষার এক মুদ্রাকর যে পর্তুগালেই থাকতো সে এই গণ্ডারটি দেখে একটি চিঠি লেখে জার্মানির নুরেমবার্গ শহরে। আরেকজন আরেকটা চিঠি লেখে নুরেমবার্গে যেখানে এই গণ্ডারটার বর্ণনার সঙ্গে একটা চিত্র-ও আঁকে এই গণ্ডারটির। এই চিঠিটা নুরেমবার্গ শহরের বাসিন্দা অ্যালব্রেক্ট ড্যুরার নামক চিত্রকার দেখে। চিঠিটা এখন লন্ডনের ব্রিটিশ ম্যুসিয়াম এ দেখা যায়। ড্যুরার প্রায় একই রকম একটা চিত্র আঁকে।
    গণ্ডার পাঁচ প্রকারের। আফ্রিকার নামে সাদা কিন্তু আসলে ধূসর যাদের একটাই শিং থাকে; আফ্রিকার নামে কালো কিন্তু আসলে ধূসর যাদের দুটো শিং থাকে; ভারতীয় গণ্ডার যাদের গায়ে খাড়া দুটো দাগ থাকে, ঘাড়ের কাছে ও কোমরের কাছে; জাভা দ্বীপের এক প্রকারের ছোট আকারের ও সুমাত্রা দ্বীপের আরো ছোট আকারের আরেকটি প্রকারের।
    সেই চিঠির চিত্র ও ড্যুরারের চিত্র ভারতীয় গণ্ডারের বেশ ভালো অনুকরণ। গায়ে খাড়া দুটো দাগ থেকে তিনটি করে পায়ের আঙ্গুল। ড্যুরারের চিত্রে প্লিনি-র প্রাকৃতিক ইতিহাসের হাতি ও গণ্ডারের শত্রুতার গল্প ও লেখা আছে জার্মান ভাষায়। চিঠি ও ড্যুরারের চিত্রে গণ্ডারটির গা গোলাকার দাগে ভরা। হয়তো যে গণ্ডারটি লিসবানে পৌঁছেছিল, তার গায়ে কোন চর্মরোগ হয়েছিল। ড্যুরারের এই চিত্র কাঠে খোদাই করে কালিতে লাগিয়ে ছাপা হয়েছিল। যেহেতু কাঠের ছাঁচটা একবার বানালেই বহু বার কালি লাগিয়ে নানা চিত্র ছাপানো যায়, ফলে এই চিত্র বহু বার ছাপানো হয়েছিল এবং এই চিত্রটি ইউরোপে অল্প জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল। এই জনপ্রিয়তাই সেই গণ্ডারটির আরো বড় সর্বনাশ ডেকে আনে।
    পর্তুগালের রাজা প্রথম ম্যানুয়েল রোম এ পোপ বা ধর্মীয় পিতার থেকে অন্যান্য দেশে ব্যবসা করার অনুমতি চাইছিল। তখনকার পোপ-রা রাজনীতির ক্ষেত্রে এক বিশিষ্ট ব্যক্তি ছিল। তার অনুমতি পাওয়ার জন্য পোপকে খুশি রাখতে হতে। তার নানা কথা শুনতে হতো, তাকে নানা অর্থ ও উপহার দিয়ে নিজের দলে রাখতে হতো। ১৫১৪-তেই পর্তুগালের রাজা পোপ জিয়োভানি মেদিচি বা দশম লিওকে হান্নো নামক একটা হাতি পাঠিয়েছিল যেটাও ভারতের কোচি থেকে একই ভাবে লিসবানে এসছিলো যেমন ভাবে ১৫১৫-তে গণ্ডারটা এসেছিলো। সেই হাতি নিয়ে বিখ্যাত ইতালীয় চিত্রকার রাফায়েল একটা ছবি এঁকেছিলো। এই বছর এই গণ্ডারটি পাঠানোর ব্যবস্থা করলো রাজা, সঙ্গে ভারতের অনেক গরম মশলা। ১৫১৫-র ডিসেম্বারে হোয়াও ডে পিনা-র জাহাজে করে রোম যাওয়ার পথে দাঁড়ানো হলো ফরাসী মারসেঁই শহরে। ফরাসী রাজা ওই পথ দিয়ে যাত্রা করছিলো জানুয়ারী মাসে। বললো একবার গণ্ডারটাকে দেখবে। নামানো হলো গণ্ডারটাকে ফরাসী রাজার দর্শনের জন্য। আবার জাহাজে ওঠা হলো। ইতালীর কাছে জাহাজ আসার পর ঝড়ে জাহাজ ডুবে গেল। শেকল দিয়ে পা বাঁধা গণ্ডারটি জলে ডুবে মরে গেল। পরে গণ্ডারটির শবদেহ উদ্ধার করা হয়েছিল। লিসবানে ফেরৎ পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল মরা গণ্ডার। বলা হয় যে শবটা পরিষ্কার করে খড় ভরে পরে ইতালীর ফ্লরেন্স শহরের যাদুঘরে রাখা হয়েছিল। তবে তার অস্তিত্ব এখন আর নেই।
    এখন এই গল্প জানা যায় কেবলমাত্র ড্যুরারের চিত্রের জনপ্রিয়তার জন্য। গরম মশলা থেকে গণ্ডার, আন্তর্জাতিক ব্যবসা থেকে সাম্রাজ্যবাদ, ইতিহাস ও তার সততা—এই গল্পেই মিশে আছে ইউনিকর্ণের গল্প ও জঙ্গলের গণ্ডারের বিপন্ন পরিস্থিতি।

EEBO location register

According to the ProQuest 'List of titles' Excel file for Early English Books Online, (EEBO), there are 1,46,322 volumes in EEBO. Out of these, 10,415 have no source mentioned. The remaining 1,35,907 volumes are from 70 cities mainly in the UK, Ireland and the USA and some from other major cities in continental Europe with a few from Canada.

Those 70 cities are

City	Number of volumes
London, UK & Ireland	59345
San Marino, CA, USA	20056
Oxford, UK & Ireland	15108
Boston, USA	8586
Cambridge, UK & Ireland	7361
New York City, USA	5250
Washington, D.C., USA	4887
Ilinois, USA	3429
Edinburgh, UK & Ireland	3362
New Haven, USA	1381
Dublin, UK & Ireland	884
Chicago, USA	853
Boston, USA	764
Los Angeles, USA	743
Glasgow, UK & Ireland	712
Durham, NC, USA	389
Manchester, UK & Ireland	349
Aberystwyth, UK & Ireland	341
San Francisco, CA, USA	249
Durham, UK & Ireland	174
Aberdeen, UK & Ireland	154
Peterborough, UK & Ireland	138
Providence, USA	136
Ann Arbor, USA	129
Windsor, UK & Ireland	124
York, UK & Ireland	119
Birmingham, UK & Ireland	112
Philadelphia, USA	107
Austin, USA	105
Gottingen, Germany	103
Toronto, Canada	96
Princeton, USA	65
Haverford, USA	57
Sacramento, USA	45
Minneapolis, USA	29
Swarthmore, USA	24
Liverpool, UK & Ireland	23
Lampeter, UK & Ireland	21
Limerick, UK & Ireland	13
Charlottesville, USA	11
Cardiff, UK & Ireland	8
Leeds, UK & Ireland	8
Clitheroe, UK & Ireland	6
Ware, UK & Ireland	5
Williamstown, USA	5
Madison, USA	4
Montreal, Canada	3
New Brunswick, USA	3
Northamptonshire, UK & Ireland	3
Paris, France	3
Dundee, UK & Ireland	2
Ely, UK & Ireland	2
Lincoln, USA	2
Richmond, IN, USA	2
St. Andrews, UK & Ireland	2
Abbotsford, Canada	1
Alabama, USA	1
Detroit, USA	1
Devon, UK & Ireland	1
Hanover, NH, USA	1
Hereford, UK & Ireland	1
Longleat, UK & Ireland	1
Newcastle, UK & Ireland	1
Norwich, UK & Ireland	1
Sheffield, UK & Ireland	1
Silver Spring, Maryland, USA	1
Stafford, UK & Ireland	1
Winchester, UK & Ireland	1
Worcester, MA, USA	1
Zurich, Switzerland	1

In each city, the list of libraries which have the volumes are as follows:

City	Library	Number of volumes
Abbotsford, Canada	Abbotsford Library	1
Aberdeen, UK & Ireland	Aberdeen University Library	107
Aberdeen, UK & Ireland	Aberdeen City Charter Room	27
Aberdeen, UK & Ireland	Blairs College Library	20
Aberystwyth, UK & Ireland	National Library of Wales	341
Alabama, USA	University of Alabama Library	1
Ann Arbor, USA	University of Michigan Library	112
Ann Arbor, USA	William L. Clements Library	10
Ann Arbor, USA	University of Michigan Law Library	7
Austin, USA	University of Texas at Austin Library	105
Birmingham, UK & Ireland	Birmingham Central Libraries	71
Birmingham, UK & Ireland	Bevan-Naish Collection	22
Birmingham, UK & Ireland	University of Birmingham Library	9
Birmingham, UK & Ireland	Woodbrooke Quaker Study Centre	5
Birmingham, UK & Ireland	John R. Hetherington Collection, University of Birmingham	3
Birmingham, UK & Ireland	Oscott College Library	2
Boston, USA	Congregational Library	202
Boston, USA	Massachusetts Historical Society Library	147
Boston, USA	Boston Public Library	142
Bristol, UK & Ireland	Bristol Public Libraries	273
Cambridge, UK & Ireland	Cambridge University Library	5869
Cambridge, UK & Ireland	Trinity College Library, University of Cambridge	430
Cambridge, UK & Ireland	Emmanuel College Library, University of Cambridge	257
Cambridge, UK & Ireland	Pepys Library, Magdalene College, University of Cambridge	194
Cambridge, UK & Ireland	St. John's College Library, University of Cambridge	171
Cambridge, UK & Ireland	Magdalene College Library, University of Cambridge	166
Cambridge, UK & Ireland	Bible Society's Library	81
Cambridge, UK & Ireland	Jesus College Library, University of Cambridge	74
Cambridge, UK & Ireland	King's College Library, University of Cambridge	30
Cambridge, UK & Ireland	Peterhouse College Library, University of Cambridge	27
Cambridge, UK & Ireland	Gonville & Caius College Library, University of Cambridge	21
Cambridge, UK & Ireland	Pembroke College Library, University of Cambridge	16
Cambridge, UK & Ireland	Christ's College Library, University of Cambridge	10
Cambridge, UK & Ireland	Queen's College Library, University of Cambridge	3
Cambridge, UK & Ireland	Selwyn College Library, University of Cambridge	3
Cambridge, UK & Ireland	Keynes Collection, Cambridge University Library	2
Cambridge, UK & Ireland	Parker Library, Corpus Christi College, University of Cambridge	2
Cambridge, UK & Ireland	St. Catharine's College Library, University of Cambridge	2
Cambridge, UK & Ireland	Fitzwilliam Museum Reference Library	1
Cambridge, UK & Ireland	Sidney Sussex College Library, University of Cambridge	1
Cambridge, UK & Ireland	Westminster College Library, University of Cambridge	1
Boston, USA	Harvard University Library	7919
Boston, USA	Houghton Library, Harvard University	353
Boston, USA	Harvard Law School Library	310
Cambridge, MA, USA	Arnold Arboretum Society Library, Harvard University	4
Cardiff, UK & Ireland	Cardiff Central Library	8
Charlottesville, USA	University of Virginia Library	11
Chicago, USA	Newberry Library	677
Chicago, USA	University of Chicago Library	174
Chicago, USA	The John Crerar Library, University of Chicago	2
Clitheroe, UK & Ireland	Stonyhurst College Library	6
Detroit, USA	Detroit Public Library	1
Devon, UK & Ireland	St. Scholastica's Abbey, Teignmouth	1
Dublin, UK & Ireland	Trinity College Dublin Library	506
Dublin, UK & Ireland	National Library of Ireland	184
Dublin, UK & Ireland	Marsh's Library	134
Dublin, UK & Ireland	Royal Irish Academy Library	34
Dublin, UK & Ireland	The Honourable Society of King's Inns Library	13
Dublin, UK & Ireland	Dublin City Public Libraries, Pearse Street Branch	10
Dublin, UK & Ireland	Dublin City Public Libraries and Archive	3
Dundee, UK & Ireland	Dundee University Library	2
Durham, UK & Ireland	Durham University Library	110
Durham, UK & Ireland	Durham Cathedral Library	36
Durham, UK & Ireland	Bamburgh Library, University of Durham	12
Durham, UK & Ireland	Ushaw College Library, University of Durham	9
Durham, UK & Ireland	King's College Library, Durham University	7
Durham, NC, USA	Duke University Libraries	389
Edinburgh, UK & Ireland	National Library of Scotland	3016
Edinburgh, UK & Ireland	Edinburgh University Library	278
Edinburgh, UK & Ireland	New College Library, University of Edinburgh	28
Edinburgh, UK & Ireland	Signet Library	28
Edinburgh, UK & Ireland	Crawford Collections, National Library of Scotland	9
Edinburgh, UK & Ireland	Royal Observatory Edinburgh	3
Ely, UK & Ireland	Ely Cathedral Library	2
Glasgow, UK & Ireland	University of Glasgow Library	689
Glasgow, UK & Ireland	Hunterian Collection, University of Glasgow	15
Glasgow, UK & Ireland	The Mitchell Library	7
Glasgow, UK & Ireland	Glasgow Public Libraries	1
Gottingen, Germany	Universitet Gottingen Bibliothek	103
Hanover, NH, USA	Dartmouth College Library	1
Haverford, USA	Haverford College Libraries	57
Hereford, UK & Ireland	Hereford Cathedral Library	1
Ilinois, USA	University of Illinois Library	3429
Lampeter, UK & Ireland	Lampeter Library - University of Wales Trinity Saint David	21
Leeds, UK & Ireland	Leeds University Library	8
Limerick, UK & Ireland	Bolton Library, University of Limerick	13
Lincoln, USA	University of Nebraska-Lincoln Library	2
Liverpool, UK & Ireland	University of Liverpool Library	23
London, UK & Ireland	British Library	50969
London, UK & Ireland	Thomason Collection, British Library	4351
London, UK & Ireland	Society of Antiquaries Library	1021
London, UK & Ireland	Lambeth Palace Library	630
London, UK & Ireland	Library of the Society of Friends	598
London, UK & Ireland	Guildhall Library	500
London, UK & Ireland	Dr. Williams's Library	328
London, UK & Ireland	Lincoln's Inn Library	239
London, UK & Ireland	Sion College Library	129
London, UK & Ireland	Wellcome Institute for the History of Medicine Library	95
London, UK & Ireland	Dulwich College Library	86
London, UK & Ireland	University of London Library	79
London, UK & Ireland	Goldsmiths Library, University of London	68
London, UK & Ireland	Public Record Office	58
London, UK & Ireland	Royal College of Surgeons of England Library	37
London, UK & Ireland	National Art Library Dyce Collection, Victoria and Albert Museum	25
London, UK & Ireland	British Museum	19
London, UK & Ireland	National Art Library, Victoria and Albert Museum	19
London, UK & Ireland	Royal College of Physicians of London Library	15
London, UK & Ireland	Middle Temple Library	14
London, UK & Ireland	National Art Library Forster Collection, Victoria and Albert Museum	12
London, UK & Ireland	Royal College of Music Library	12
London, UK & Ireland	Goldsmiths' Library of Economic Literature	10
London, UK & Ireland	The Goldsmiths' Company Library	7
London, UK & Ireland	The Royal Society, London	7
London, UK & Ireland	St. Paul's Cathedral Library	5
London, UK & Ireland	Medical Society of London Library	3
London, UK & Ireland	Jesuits in Britain Archive	2
London, UK & Ireland	Patent Office Library	2
London, UK & Ireland	F.S. Ferguson, London	1
London, UK & Ireland	Heythrop College Library, University of London	1
London, UK & Ireland	Queen's College, London, Library	1
London, UK & Ireland	Royal Institute of British Architects Library	1
London, UK & Ireland	Westminster Abbey Library	1
Longleat, UK & Ireland	Longleat Library and Archives	1
Los Angeles, USA	William Andrews Clark Memorial Library	743
Madison, USA	University of Wisconsin-Madison Library	4
Manchester, UK & Ireland	The John Rylands Library, University of Manchester	203
Manchester, UK & Ireland	Chetham's Library	130
Manchester, UK & Ireland	Manchester Central Library	14
Manchester, UK & Ireland	Haigh Hall Library	2
Minneapolis, USA	University of Minnesota Library	24
Minneapolis, USA	University of Minnesota Law Library	5
Montreal, Canada	Osler Library of the History of Medicine, McGill University	3
New Brunswick, USA	Rutgers University Library	3
New Haven, USA	Yale University Library	890
New Haven, USA	Beinecke Rare Book and Manuscript Library	472
New Haven, USA	Harvey Cushing/John Hay Whitney Medical Library	17
New Haven, USA	Yale Center for British Art	1
New Haven, USA	Yale Divinity School Library	1
New York City, USA	Burke Library, Union Theological Seminary	4729
New York City, USA	New York Public Library	250
New York City, USA	Columbia University Libraries	244
New York City, USA	Carl H. Pforzheimer Library	19
New York City, USA	Pierpont Morgan Library	6
New York City, USA	Cornell University Libraries	1
New York City, USA	Library of the Jewish Theological Seminary	1
Newcastle, UK & Ireland	Newcastle upon Tyne Libraries	1
Northamptonshire, UK & Ireland	Finedon	3
Norwich, UK & Ireland	Norwich Public Library	1
Oxford, UK & Ireland	Bodleian Library	13355
Oxford, UK & Ireland	Christ Church Library, University of Oxford	522
Oxford, UK & Ireland	Worcester College Library, University of Oxford	504
Oxford, UK & Ireland	The Queen's College Library, University of Oxford	197
Oxford, UK & Ireland	Corpus Christi College Library, University of Oxford	167
Oxford, UK & Ireland	Balliol College Library, University of Oxford	87
Oxford, UK & Ireland	Codrington Library, All Souls College, University of Oxford	61
Oxford, UK & Ireland	John Johnson Collection of Printed Ephemera, Bodleian Library	47
Oxford, UK & Ireland	Exeter College Library, University of Oxford	38
Oxford, UK & Ireland	Magdalen College Library, University of Oxford	30
Oxford, UK & Ireland	Lincoln College Library, University of Oxford	19
Oxford, UK & Ireland	St. John's College Library, University of Oxford	12
Oxford, UK & Ireland	Merton College Library, University of Oxford	8
Oxford, UK & Ireland	Oriel College Library, University of Oxford	8
Oxford, UK & Ireland	Jesus College Library, University of Oxford	7
Oxford, UK & Ireland	University College Library, University of Oxford	7
Oxford, UK & Ireland	Regent's Park College Library, University of Oxford	5
Oxford, UK & Ireland	Wadham College Library, University of Oxford	5
Oxford, UK & Ireland	Hertford College Library, University of Oxford	4
Oxford, UK & Ireland	Keble College Library, University of Oxford	4
Oxford, UK & Ireland	St. Hugh's College Library, University of Oxford	4
Oxford, UK & Ireland	New College Library, University of Oxford	3
Oxford, UK & Ireland	Radcliffe Camera	3
Oxford, UK & Ireland	St. Edmund Hall Library, University of Oxford	3
Oxford, UK & Ireland	University of Oxford Archives	3
Oxford, UK & Ireland	Harris Manchester College Library, University of Oxford	2
Oxford, UK & Ireland	The McGowin Library, Pembroke College, University of Oxford	2
Oxford, UK & Ireland	English Faculty Library, University of Oxford	1
Paris, France	Bibliotheque nationale de France	3
Peterborough, UK & Ireland	Peterborough Cathedral Library and Archives	138
Philadelphia, USA	University of Pennsylvania Library	81
Philadelphia, USA	The Library Company of Philadelphia	25
Philadelphia, USA	Presbyterian Historical Society	1
Princeton, USA	Princeton University Library	41
Princeton, USA	Princeton Theological Seminary Library	24
Providence, USA	The John Carter Brown Library, Brown University	136
Richmond, IN, USA	Earlham College Library	2
Sacramento, USA	California State Library	45
San Francisco, CA, USA	Sutro Library	249
San Marino, CA, USA	The Huntington Library	20056
Sheffield, UK & Ireland	University of Sheffield Library	1
Silver Spring, Maryland, USA	U.S. National Weather Service	1
St. Andrews, UK & Ireland	University of St. Andrews Library	2
Stafford, UK & Ireland	William Salt Library	1
Swarthmore, USA	Swarthmore College Library	24
Toronto, Canada	University of Toronto Library	96
Ware, UK & Ireland	St. Edmund's College Library, Ware	5
Washington, D.C., USA	Folger Shakespeare Library	4454
Washington, D.C., USA	Library of Congress	433
Williamstown, USA	Williams College Library	5
Winchester, UK & Ireland	The Morley Library, Winchester Cathedral	1
Windsor, UK & Ireland	Eton College Library	124
Worcester, MA, USA	American Antiquarian Society Library	1
York, UK & Ireland	York Minster Library	119
Zurich, Switzerland	Zentralbibliothek, Zurich	1
	No source	10415

This topological list may be useful for some kind of analysis.

পশুপ্রজাতিভিত্তিক রাজনীতি

পশুপ্রজাতিভিত্তিক রাজনীতি

        রূপালী গঙ্গোপাধ্যায়ের আনন্দবাজার পত্রিকা-র সম্পাদকীয় পাতায় ১২ই জুলাই ২০২০-তে প্রকাশিত প্রবন্ধের (‘অপরাধী থাকে আয়নায়’) পরিপ্রেক্ষিতে আমিষ আহার, নৃশংসতা ও রাজনীতি—এই তিন বিষয়ের সম্পর্ক নিয়ে আমার এই লেখা। প্রথমেই দেখা যাক কী ধরনের পশুর মাংস খাওয়া নিয়ে নানা ধার্মিক ও সাংস্কৃতিক নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। জৈন ধর্মে সব রকম আমিষ খাওয়াই বাদ, যদিও দুধ খাওয়া বারণ নয়। ইহুদি ধর্মে খৃষ্ট, হিন্দু বা ইসলাম ধর্মের চেয়ে নিষিদ্ধতার তালিকাটি বড়। কিছু পশুকে নোংরা মনে করা হয় এবং ফলে তাদের মাংস খাওয়াও বারণ। উভচর প্রাণী যেরকম ব্যাঙ খাওয়ার বিরুদ্ধে ইহুদিরা বলে। প্রধানত, মাংসাহারী চার-পেয় প্রাণী খাওয়ার বিরুদ্ধেও বেশির ভাগ ধর্মেই চল আছে। ফলে, যেরকম কাক, শকুন, চিল, বাজ, ঈগল পাখি খাওয়াও বেশির ভাগ ধর্মেই বারণ, সেরকম কুকুর, বেড়াল খাওয়াও বারণ। তবে, চীন, কোরিয়া, ভিয়েতনাম, এবং আমাদের দেশে নাগাল্যান্ড এ কুকুর ও বেড়াল খাওয়ার রীতি আছে। মণিপুর ও মিজোরাম এ কুকুর খাওয়ার রীতি থাকলেও বেড়াল কেউ বিশেষ খায় না। আমিষ মানুষদের মধ্যে পূর্ব আফ্রিকার কিছু এলাকায় মাছ খাওয়া বারণ এবং ইহুদি ধর্মে যে সব সামুদ্রিক প্রাণীর আঁশ থাকে না, তা খাওয়ার বিরুদ্ধে ফর্মান জারি আছে। বিনা আঁশ সামুদ্রিক খোলাযুক্ত প্রাণী যেরকম চিংড়ি, কাঁকড়া, ওয়েস্টার এই ইহুদি নিষিদ্ধতালিকার বাইরেও এক ধরনের মানুষের পক্ষে খাওয়া বারণ—কোন প্রথার উপর ভিত্তি করে নয় যদিও, বরং শারীরিক কারণে—যাদের ওই খোলায় এলার্জি হয়।

        ইহুদিদের নিষিদ্ধের তালিকায় যে সকল পশুদের পা কাটা নয়, যেমন উট, ঘোড়া ও খরগোশ, তাও আছে। উটের মাংসের ইসলামে চল আছে ও ঘোড়ার মাংস ইসলামে ও ইউরোপীয় খ্রীষ্টানদের মধ্যে অনেকেই খায়। সরীসৃপ আহার ইহুদি ও ইসলাম ধর্মে বারণ যদিও ভারতে নাগাল্যান্ডে কিছু মানুষেরা সাপ খায়। ইঁদুর আহার আমাদের পশ্চিমবঙ্গেই হয়। কুমির পূর্ব এশিয়ায় অনেক দেশেই খায়। বাদুড় পাখি নয় কিন্তু উড়ে বেড়ায়। যে প্রাণী কে বোঝাই শক্ত, তাকে খেতেও কিছু অসুবিধা হয়। ফলে ইহুদি ও ইসলাম ধর্মে এর বিরুদ্ধেও নির্দেশ আছে। মানুষকে আক্রমণ করে যে সব বড় প্রাণী, যেরকম বাঘ, সিং, ভাল্লুক—তাদের সংখ্যাও কম ও ধরাও মুশকিল। ইহুদি ও ইসলাম ধর্মের নিষিদ্ধাবলীতে এই সকল প্রাণীর মাংস থাকাটা খুব একটা তফাৎ সৃষ্টি হয়তো করে না। ভারতের উত্তর-পূর্ব পাহাড়ের কিছু মানুষেরা যদিও এরকম প্রাণীর মাংস পেলে, খেয়ে নেয়। অনেক বাঙালিরা মুরগি খায় না যদিও তারা পাঠার মাংস খায়। পড়ে রইল গরু ও শুয়োর—যার বিষয় পাঠকেরা হয়তো ওয়াকিবহাল। এই দীর্ঘ তালিকা প্রস্তুত করার উদ্দেশ্য একটাই—মানুষে অন্য মানুষ ছাড়া বাকি সকল প্রাণীকে হত্যা ও আহার করা সামগ্রিক ভাবে নিষিদ্ধ মনে করে না।

        পশু প্রেম ও পালিত পশু প্রেমের মধ্যে একটা তফাৎ আছে। মানুষে পাখি, কুকুর, বেড়াল, গরু ও ঘোড়া সাধারণ ভাবে পোষে। তার মধ্যে গরু ও ঘোড়াকে কাজে লাগানো হয়। বিনা কাজে লাগিয়ে স্রেফ সখ করে গরু ঘোড়া খুব বেশি মানুষে পোষে না। কুকুরকে প্রহরী হিসেবে কিছু মানুষ রাখে ও কিছু মানুষ শিকারি হিসেবে রাখে। কিন্তু হয়তো তার চেয়ে বেশি মানুষে, বেড়ালের মত করে কুকুর পোষে, স্রেফ নিজের সখের জন্য। এই সখ করে পোষ্য রাখা কিছুটা জোগান ও কিছুটা প্রথার উপর নির্ভরশীল। কেউ পোষা ইঁদুর রাখতেই পারে, স্টুয়ার্ট লিট্টিলের মত তবে তার চল কম। অনেকে পোষা বাঘ, ভাল্লুক, সাপ রাখে। তা কিছু এলাকায় আইনত অপরাধ, কিছু এলাকায় নয়, কিন্তু এই প্রাণীগুলি মানুষ মারতে পারে, ফলে এর চল-ও কম। পশু প্রেম—গরু, ছাগল, কুকুর, ভাল্লুক, শুয়োর—সবার প্রতি-ই হতে পারে। আইন ও প্রথা অনুযায়ী এর মধ্যে কিছু পশুদের সঙ্গে মানুষে সহবাস করে।

        পশু খাওয়া কি নৃশংসতার প্রমাণ? মৌরলা মাছ খাওয়া ও খরগোশ খাওয়ার মধ্যে কি পার্থক্য আছে? মানুষে অন্য পশু না খেয়েও দিব্যি থাকতে পারে। ভিগানরা যেরকম থাকে। এই খাওয়ার খেয়ে কেউ কমজোরী-ও হয়ে ওঠে না। বিরাট কোহলি ও সেরিনা উইলিয়ামস দুজনেই কিছু বছর ধরে ভিগান। এদের শারীরিক ক্ষমতা নিয়ে সংশয় হওয়ার কথা নয়। অন্য পশু হত্যা কি প্রাকৃতিক ধারার বিপরীতে? না, পশুরা হয়ে আমিষ বা নিরামিষ বা উভয়আহারী। পশু হত্যা করা কি অনৈতিক? ব্যাপারটা প্রাকৃতিক হলে অনৈতিক হওয়ার কারণ নেই। তাহলে ব্যাপারটা কী? প্রশ্নটা নিজের পছন্দ করার হকের। আমার পছন্দ যদি অন্য কারুর অপছন্দ হয়ে তবে? যতক্ষণ আমি অন্য আরেক প্রাণী যে নিজের পছন্দ ব্যপ্ত করতে চাইছে এবং যাকে আমি সমান অধিকারের হকদার মনে করছি, তার ক্ষতি না করছি, ততক্ষণ আমার পছন্দের উপর অন্য কারুর বাঁধা সৃষ্টি করা অনৈতিক। মুরগি তো বলে না বাবা, এসো আমায় খাও—তার পছন্দের কী হল? মানুষ বাদে অন্য প্রাণীদের মানুষেরা সমান অধিকারের হকদার মনে করে না। যদি অন্য পশুদের কোন অধিকার নেই, তবে মুরগি খাই কী কচ্ছপ খাই, তার মধ্যে তফাৎ কী? তফাৎ এই যে মানুষে নিজের স্বার্থে জানে যে তাদের পৃথিবীটাকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে, না হলে মানুষেরা নিজেরাই বিপদে পড়বে। ফলে প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য বজায় রাখা মানুষের স্বার্থেই জরুরি। কচ্ছপের সংখ্যা যেহেতু কম তাই কচ্ছপ বাঁচিয়ে রাখতে হবে এবং মুরগির সংখ্যা যেহেতু বেশি তাই মুরগি হত্যা মানুষের স্বার্থকে ক্ষতি করে না। ভারতে সাধারণত ক্যাঙারু পাওয়া যায় না। অস্ট্রেলিয়ায় যেখানে অনেক ক্যাঙারু পাওয়া যায়, সেখানে মানুষে ক্যাঙারু খায়, ভারতে না।

        ধার্মিক নিষিদ্ধাবলীতে যে সব পশুর মাংস খাওয়া বারণ, তার কারণ হিসেবে সেই সব প্রাণীকে নোংরা ভাবা হয়ে অথবা ভারতে গরুর মত পবিত্র ভাবা হয়। এই পবিত্র-নোংরার ফারাকটা মানুষে সামগ্রিক ভাবে দেখে না, যেরকম আগের উদাহরণগুলি থেকে স্পষ্ট। ফলে, এক দলের মতকে অন্য দলের উপ চাপিয়ে দেওয়াটা গায়ের জোর দেখানো। সম্প্রতি, চীনে কোরোনাভাইরাস বলা হচ্ছে বাদুড় ও প্যাঙ্গোলিনের থেকে মানুষের মধ্যে ছড়িয়েছে। এই বাদুড় ও প্যাঙ্গোলিনের মাংস ওখানকার মানুষেরা খায়। কেন খায় প্রশ্ন করা বৃথা। সবাই কেন বিরাট কোহলি ও সেরিনা উইলিয়ামসের মত ভিগান নয়? শুয়োর থেকে সোয়াইন ফ্লু হয়, গরু থেকে ফুট এন্ড মাউথ রোগ, মুরগি থেকে বার্ড ফ্লু। কোন প্রাণীর সংখ্যা খুব কম না হলে, তা খাওয়া অনৈতিক কেন? এটা আবার সেই এক দলের মত অন্য দলের উপর চাপিয়ে দেওয়া। ভারতে, গরুর রচনার ইতিহাস খুব লম্বা এবং আলোচনা করতে গেলে এক দল মানুষ মারতে ছুটে আসে। তাই, সেটা আপাতত বাদ-ই দিলাম। সম্প্রতি মিজোরাম ও নাগাল্যান্ড কুকুর বেড়ালের মাংসের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। আবার সেই এক দলের রুচি আরেক দলের উপর চাপিয়ে দেওয়া। এর সঙ্গে নৃশংসতা বা পশু প্রেমের কম সম্পর্ক আছে। ব্যাপারটা রাজনৈতিক।

        রূপালী গঙ্গোপাধ্যায় প্রশ্ন করেছেন যে আমরা বর্বর পদ্ধতিতে মুরগি না মেরে যন্ত্রণাবিহীন পদ্ধতিতে কেন মারি না। মুরগির মরা নিয়ে প্রশ্ন না করে মুরগির বাঁচা নিয়ে প্রশ্ন হয়তো বেশি গুরত্বপূর্ণ। ফ্রি-রেঞ্জ মুরগি, ডিম ইত্যাদি বাজারে পাওয়া যায়, অনেক ক্ষেত্রে বাক্সে বা ঠোঙায় হাসি হাসি মুরগির ছবি সমেত। মানুষের স্বার্থে ফ্রি-রেঞ্জ মুরগি, ডিম বেশি ভালো কারণ তাতে কৃত্রিম ওষুধ থাকে না। তবে মুরগির ক্ষেত্রে কি সেটা ভালো? ‘জন্মিলে মরিতে হবে, অমর কে কোথা কবে,’ মাইকেল লিখেছিলেন। তবে যতদিন বেঁচে আছি, ততদিন যেন সুখে থাকি।

        কোন প্রাণীর যার শরীরে রক্ত বয়ে, সে এক ঝটকায় না মরে, যদি আস্তে আস্তে তার মৃত্যু হয়, তাহলে মৃত্যুর পর তার মাংস নরম হয়। এই বেশি বেদনাদায়ক পদ্ধতি প্রথায় পরিণত হওয়ায়, মানুষে ধার্মিক সান্ত্বনার রীতি খুঁজে বার করেছে যাতে মানুষের অন্য এক প্রাণীকে বেদনা দেওয়ার যে পীড়া, সেটা কম হয়। কসাইদের পীড়ার কথা কম গল্পেই লেখা থাকে। সাম্প্রতিককালে, পেরুমাল মুরুগানের পূনাচি উপন্যাসে এক কসাই কিছু ছাগলের নির্বীজকরণ করার পর হাউ হাউ করে কাঁদতে থাকে যে সে পাপী এবং মদ খেতে থাকে নিজের ভিতরের বিষাদ কম করার জন্য। সাহিত্যিক মুরুগান এই ঘটনা নিয়ে আর বিশেষ কিছু বলে না, একটা নিস্তবদ্ধতা রয়ে যায় এই ঘটনা নিয়ে। কসাইদের বেদনা নিয়েও সাহিত্যে এবং সমাজে সাধারণত একটা নিস্তবদ্ধতা বজায় থাকে। ফিরে যাওয়া যাক, মানুষের আহারের জন্য প্রাণী হত্যার পদ্ধতিতে। মারার আগে প্রাণীটিকে দৌড় করালে, বলা হয়, প্রাণীটির মৃত্যুর পর তার মাংস আরো নরম হয়। এই পদ্ধতি কার্যকর করা যেহেতু মুশকিল, তাই মানুষে এটার সচরচর অবলম্বন করে না।

        অন্য পশু হত্যার মধ্যে যে নৃশংসতা আছে, তার চেয়েও বেশি নৃশংসতা আছে মানুষের আহারের জন্য অন্য পশুদের বাঁচিয়ে রাখার কিছু পদ্ধতিতে, যাকে ইংরেজিতে বলা হয় ফ্যাক্ট্রি ফার্মিং। তবে, কিছু পশু হত্যা বেআইনি করে দেওয়া স্রেফ কিছু মানুষের নোংরা বা পবিত্রতার ভিত্তিতে রাজনৈতিক মত ও শক্তি চাপিয়ে দেওয়া ছাড়া অন্য কিছু নয়। পশু জীবন শেষ করে দেওয়া নিষ্টুর কিন্তু প্রাকৃতিক ধারার বিপরীত নয়। পশুকে জীবিত রেখে তার উপর নিষ্টুরতা চালানো বরং বেশি নিষ্টুর। আধুনিক ডেয়ারি ফার্ম-ও মানুষের নৃশংসতার প্রমাণ। গরুর আলোচনায় এই বিষয়টা চাপা পড়ে যায় কারণ তাতে ধর্মকে অতিক্রম করে মানুষের ক্ষতি।

        অন্য পশুদের প্রতি মানুষের আহার ভিত্তিক নৃশংসতা ছাড়াও আছে, দৈনন্দিন অল্প বিচ্ছিন্ন নিষ্টুরতার ঘটনা যাতে মানুষের কোন লাভ হয় না, স্রেফ বিকৃত কোন আনন্দ ছাড়া। সমাজে নানা বিকৃত আচরণের মত করেই একে দেখতে হবে আলাদা ভাবে পশুদের প্রতি নিষ্টুরতা হিসেবে না দেখে। পশুদের নিয়ে লেখা নীতিবাক্যের ইতিহাসে দেখা যায় পশুদের প্রতি লেখকেরা মানুষদের সমবেদনশীল হতে বলে কারণ তাতে নাকি মানুষের মন অন্য মানুষের প্রতিও সহানুভূতিশীল হয়। কেউ এই যুক্তি দিয়ে বলতেই পারে নিরামিষ মানুষেরা বেশি সমবেদনশীল। ভারতের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মানুষ নিরামিষ আহার করে, কিন্তু তার সঙ্গে ভারতের মানুষের সহানুভূতির মাপকাঠির কোন যোগসূত্র আছে দাবি করাটা নিষ্ফল। রূপালী গঙ্গোপাধ্যায় যে মন্তব্য করেছেন যে ভারতীয়দের মানুষের প্রতি নিষ্টুরতা ও পশুদের প্রতি নিষ্টুরতার মধ্যে একটা সম্পর্ক আছে, সেই যুক্তি অনুযায়ী হয়তো বলা যেতে পারে যে যে নিরামিষ ব্যক্তিরা পশুদের প্রতি কোন বিকৃত আচরণ করে না, তারা মানুষের প্রতিও অতি সমবেদনশীল। আমাদের নিরামিষ রাজনৈতিক নেতা নেত্রীরা যারা হিংস্রাত্মক আচরণের প্ররোচনা দেয়ে তারা হয়তো এই যুক্তিটা নাও মানতে পারে।

        মানুষের স্বঘোষিত পশু প্রেম বুঝতে হলে বুঝতে হবে যে কোন মানুষই যেরকম সকল মানুষকে ভালোবাসে না, কিছু কিছু মানুষকে ভালোবাসার সৌভাগ্য তার হতে পারে, সেরকমই কোন মানুষই সব পশুকে ভালোবাসে না, কিছু কিছু পশু বা একটি প্রাণীর প্রতি তার বিশেষ টান। অন্য প্রাণীদের প্রতি তার হয়তো একটা নিষ্টুরতা রয়েই যায়, যেরকম যারা আধুনিক ডেয়ারি ফার্মের দ্রব্য খায়। বিশেষ করে কোন প্রজাতির পশুর প্রতি সমবেদনশীলতা দেখতে গেলে অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যাবে, সেটা কোন প্রজাতির পশুর প্রতি সমবেদনশীলতার চেয়ে কোন প্রজাতির মানুষের বিরুদ্ধে যাওয়া। যেরকম চীনের বাদুড় খাওয়ার রীতি বন্ধ করার ডাক, বা নাগাল্যান্ড, মণিপুর, মিজোরামে কুকুর খাওয়া বন্ধ করার ডাক বা গো-রাজনীতি।

        মানুষে এই পৃথিবীতে এক প্রজাতিভিত্তিক আধিপত্য বজায় রাখে। অন্য পশুদের খাওয়ার চেয়ে বড় অন্য পশুদের জীবদ্দশায় জব্দ করে রাখা এবং ব্যবহার করা। সহবাস করা এবং বলপূর্বক জব্দ করা এক নয়। পশু খাওয়া রাজনীতি মানুষের প্রজাতিভিত্তিক আধিপত্যের প্রতিফলনের একটা ছোট অঙ্গ।

How sexual assault works

Jeannie Vanasco, ‘I Kept Talking to My Rapists,’ The Atlantic, 25.2.2020